
সহজ ভাষায় ফায়ার পাম্প
07 Aug 2024ফায়ার
পাম্প
ফায়ার হাইড্রেন্ট বা স্প্রিংকলার সিস্টেমের হার্ট বা হ্রৎপিন্ড হলো ফায়ার পাম্প। সাধারনভাবে পাম্প একটি মেসিন যার কাজ হলো ফ্লুইডকে (নন কপ্রেসবল ফ্লুইড- পানি, তেল, রক্ত ইত্যাদি আর কপ্রেসবল ফ্লুইড - বাতাস, গ্যাস ইত্যাদি) এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরীকরন, লো লেভেল থেকে হাই লেভেলে তোলা, কম প্রেসার থেকে হাই প্রেসারে প্রবাহ করা। যেমন- নীচতলা থেকে বহুতল ভবনের ছাদে ওভারহেড ট্যাংকে পানি উঠানো, তেল স্থানান্তর, বাতাসকে কমপ্রেস্ড করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর। মানুষের শরীরে হার্ট যেমন রক্ত নালীর মাধম্যে শরীরের সকল কোষে রক্ত সরবরাহ করে ফায়ার পাম্পও পাইপলাইনের মাধমে পুরো ভবনের সকল অংশে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করে। আমাদের আলোচ্য হাইড্রেন্ট সিস্টেমে পানি উপরে তুললেই হবেনা পানিতে যথেষ্ট পরিমান চাপও থাকতে হবে, পানির প্রবাহ যথেষ্ট হতে হবে। অর্থ্যাৎ হাইড্রেন্ট সিস্টেমে ভবনের দূরতম জায়গায় যথেষ্ট পরিমান পানি (Flow Rate) পর্যাপ্ত চাপে (Pressure) যে যন্ত্র সরবরাহ করে তাকে আমরা ফায়ার পাম্প বলি। স্বভাবতই অন্য যে কোন পাম্প থেকে ফায়ার পাম্পের ডিজাইন ও নির্মান কোড এবং স্ট্যান্ডার্ড স্বতন্ত্র ও শক্ত।
পাম্পের ইতিহাস
খৃস্টপূর্ব
২০০০ সালে মিশরীয়রা প্রথম ম্যানুয়াল পাম্প তৈরী করে যার নাম স্যাদপ। এরপরে রোমানরা
(খৃস্টপূর্ব ৬০০-৭০০) ভার্টিক্যাল Waterwheel (Noria) আবিষ্কার করেন যা দিয়ে তারা ব্যাহতভাবে পানি তুলতে
পারত। এটাতে তারা কাঠের তৈরী চাকা ব্যবহার করে। খৃস্টপূর্ব ২৩০ সালের দিকে আর্কিমিডিস
প্রথম স্ক্রু পাম্প আবিষ্কার করেন। খৃষ্টপূর্ব ২২২ সালে গ্রীসেরএক আবিষ্কারক নাম Ktesibios প্রথম পিস্টন পাম্প আবিষ্কার করেন। এভাবে
চলতে থাকে পাম্প উন্নতির গল্প।
১৪৭৫-প্রথম সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প আবিষ্কার:
১৫৯৩- ফান্সের নিকোলাস প্রথম গিয়ার পাম্প আবিষ্কার করেন
১৬৩৬- জার্মানীর পাপেন ডবল ডিপ টুথ্ট রোটারী গিয়ার পাম্প আবিষ্কার করেন।
১৬৫৪- জার্মানীর এক পদার্থ বিজ্ঞানী প্রথম ভ্যাকুয়াম পিস্টন পাম্প আবিষ্কার করেন
১৬৭৫- লন্ডনের স্যার স্যামুয়েল প্রথম প্লানজার বা পজিটিভ ডিসপ্লেসমেন্ট পাম্পের প্যাটেন্ট তৈরী করেন।
এরপর পাম্পের উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটে ১৭০০ থেকে ১৯০০ সালে। এরমধ্যে মাইলস্টোনগুলো হলো:
1738- Daniel Bernoulii creates a principle of fluid dynamics, known as “ Bernoulii’s Principle’
1782- James Watt, invented
the connecting rod crank mechanism on steam piston
pumps.
1818- First practical centrifugal pump called the Massachusetts
pump, built in the U.S.
1849- Centrifugal Pump
improved by the addition of curved vanes.
1859- American, Henry Rossiter Worthington patented the duplex steam pump.
1868- Stork Pompen of Hengelo, Netherlands creates the first
concrete volute pump.
1885- First fuel pump went into service in Fort Wayne, Indiana, USA.
1930- Rene Mnieneau’s thesis leads to the first progressing cavity pump.
1947- First submersible pump is developed by sixteen Englesson in Sweden.
1955- France Klaus introduces the first magnetic drive pump.
পাম্পের গঠন উপাদান:
পাম্প এবং এর ড্রাইভিং ইউনিট নিয়ে একটা পাম্প সেট। পাম্পের বডি অনেক গুলো যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে গঠিত। ফ্লুইডের প্রকৃতি, আবহাওয়া, প্রয়োগিক ক্ষেত্র ইত্যাদি বিবেচনা করে পাম্প বডির গঠনশৈলী ও গঠন উপাদান ডিজাইন ও নির্মান করা হয়। ড্রাইভিং ইউনিট ইলেকট্রিক মোটর বা ডিজেল ইঞ্জিন বা স্টীম টারবাইন হতে পারে। একটা পাম্পের সাধারন উপাদানগুলোর পরিচিত হলো:
১.
কেজিং বা ভলুট
২.
রিং
৩.
ইমপেলার
৪.
স্ক্রুপ্লাগ
৫.
ম্যাকানিক্যাল সিল
৬.
ড্রাইভ ইউনিট- মোটর
৭
. এ্যাডাপটার
৮
সিলিংগার স্যাফ্ট ইমপেলার নাট
পাম্পের কর্মনীতি:
পাম্প যান্ত্রিক শক্তিকে ফ্লুইডে প্রেসার ইনার্জিতে রুপান্তর করে অর্থাৎ যান্ত্রিক শক্তি হাইড্রলিক শক্তিতে রুপান্তরিত হয়। একটা পাম্পের দুটি পোর্ট - সাকশন এবং ডেলিভারী। সাকশন পাইপের মাধ্যমে ট্যাংক থেকে পানি পাম্পে আসে, পাম্প পানিকে প্রেসারাইজড করে উচ্চ চাপে ও গতিতে ডেলিভারী করে। সাকশন পাইপ এবং ডেলিভারী পাইপের ডায়া এক রকম নয়- একটা মোটা আর একটা চিকন। কারন কি? ফায়ার পাম্প স্বয়ংক্রিয় ভাবে চালু হবে। সেনসিংলাইনের মাধ্যমে সিস্টেমের প্রেসার পাম্পের কন্ট্রোল প্যানেলে আসে এবং তা প্রেসার সুইসের মাধ্যমে পাম্পকে অন/অফ করে। যেমন ধরুন, সিস্টেম প্রেসার ১০ বার। জকি পাম্প ৯বারে সেট করা, মেইন পাম্প ৭বারে সেটআপ করা। এখন সিস্টেমের প্রেসার কোন কারনে নেমে ৯ বার হলেই জকি পাম্প চালু হয়ে যাবে এবং ৭ বারে আসা পর্যন্ত জকি পাম্প মেক আপ করবে। সিস্টেমের প্রেসার যদি আরও নামতে থাকে এবং এক পর্যায়ে তা ৭ বারে চলে আসে তখন মেইন পাম্প চালু হয়ে যাবে। কোন কারনে মেইন পাম্প চালু না হলে একটা নির্দিষ্ট টাইম ব্যবধানে স্ট্যান্ডবাই মেইন পাম্প চালু হয়ে যাবে। এই সাধারন লজিকে ফায়ার পাম্প সেট কাজ করে। একটা মেইন পাম্প এবং একটা জকি পাম্পের অপারেশন / কানেকশন / লজিক ডায়াগ্রাম চিত্র ৮.৫-এ দেখা যাচ্ছে- কিভাবে একটা সেনসিং লাইন কন্ট্রোল প্যানেল এবং সিস্টেমকে সংযুক্ত করেছে।
পাম্পের সাকশন টাইপ
পাম্প সাকশন পাইপের মাধ্যমে পানির ট্যাংকের / সোর্সের সাথে যুক্ত এবং এটার ডেলিভারী পাইপ ওভারহেড ট্যাংকে বা ফায়ার হুজে বা স্পিংকলারে যেয়ে শেষ হয়েছে। ট্যাংকের পানির উপরিভাগের পজিশন বিবেচনায় সাকশন দুধরনের হতে পারে- পজিটিভ এবং নেগেটিভ। চিত্র ৮.৬-এ ডান পাশের ছবিতে নেগেটিভ সাকশন দেখানো হয়েছে যেখানে টাংকের পানির লেভেল পাম্পের সাকশন সেন্টার লাইনের নীচে আছে। আর পজিটিভ সাকশনের ক্ষেত্রে ট্যাংকের পানির লেভেল পাম্পের সাকশন সেন্টার লাইনের উপরে থাকে যা বাম পাশের ছবি থেকে আরও পরিষ্কার হবে বলে মনে হয়। পজিটিভ সাকশনকে ফ্লাডিং কন্ডিশনও বলে। এতে পাম্পে সব সময় পানি থাকে। এখানে সাকশন ফেল করার সুযোগ কম যেটা নেগেটিভ সাকশনে ফেল করার সম্ভাবনা বেশী । ফায়ার ইস্যু যেহেতু ইমারজেন্সী, কোন ফেল করার সুযোগ দেয়া যাবে না তাই ফায়ার পাম্প পজিটিভ সাকশন হতে হবে বলে NFPA ২০ তে বলা হয়েছে ।
পাম্পের প্রকারভেদ
কর্মনীতির আলোকে রটোডাইনামিক্স এবং পজিটিভ ডিসপ্লেসমেন্ট -এই দুটি বড় দাগে পাম্পকে ভাগ করা হয়। পজিটিভ ডিসপ্লেসমেন্ট পাম্পকে আরও দুটি উপভাগেভাগ করা হয়- রেসিপ্রেকেটিং এবং রোটারী। সমস্ত প্রকার সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পহ যেমন- হরিজোন্টাল স্পিলিট কেজ, এন্ড সাকশন পাম্প, টারবাইন পাম্প, সাবমারসিবল পাম্প হলো রটোডাইনামিক্স পাম্পের অন্তভর্‚ক্ত এবং ডায়াফ্রাম পাম্প, পিস্টন পাম্প পজিটিভ ডিসপ্লেসমেন্ট পাম্পের অর্ন্তূক্ত। প্রয়োজনের আলোকে আমরা পাম্প নির্বাচন করব। ফায়ারফাইটিং এর ক্ষেত্রে আমরা ফায়ার হাইড্রেন্ট পাম্প হিসাবে হরিজোন্টাল স্পিলিট কেস, এন্ডসাকশন, টারবাইন পাম্প নির্বাচন করে থাকি। এগুলো সবই সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প তবে ফায়ার পাম্প হিসাবে বিশেষভাবে তৈরী
মেইন ফায়ার পাম্প
ভবনে ফায়ার হাইড্রেন্ট বা স্প্রিংকলার সিস্টেমে পর্যাপ্ত পানি নির্ধারিত চাপে সরবরাহ করার জন্য যে পাম্প ব্যবহার করা হয় তাকে মেইন ফায়ার পাম্প বলে। এই পাম্প হরিজোনটাল স্পিলিট কেজ, এন্ড সাকশন বা ভারটিক্যাল টারবাইন পাম্প হতে পারে। কোড বা স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে দুটি মেইন পাম্প থাকবে- একটি ওয়ার্কিং এবং অপরটি স্ট্যান্ডবাই। ওয়ার্কিং পাম্পটি ইলেকট্রিক্যাল মোটর ড্রাইভেন হয় এবং স্ট্যান্ডবাই পাম্পটি বিকল্প ইমারজেন্সি পাওয়ার যেমন ডিজেল ইঞ্জিন বা স্টিম টারবাইন বা স্ট্যান্ডবাই ডিজেল জেনারেটর বা অন্য কোন ডেডিকেটেড ইলেকট্রিক্যাল সোর্স দ্বারা চালিত হবে।
প্রেসার মেইনটিন্যান্স
(Jockey or Make-Up)
পাম্প
ফায়ার হাইড্রেন্ট বা স্প্রিংকলার সিস্টেমে আগুন নেভানোর জন্য পানির প্রবাহ হলে সিস্টেমের প্রেসার কমে যাবে, তাই না? নির্দিষ্ট মাত্রার নীচে প্রেসার নেমে গেলে ফায়ার পাম্প অটোমেটিক চালু হয়ে যাবে- এই লজিকে ফায়ার পাম্প কাজ করে। আবার অগ্নি দুর্ঘটনা ছাড়াই অন্য কোন কারনে যেমন অপ্রত্যাশিত পানি লিক করার কারনে প্রেসার নেমে যেতে পারে। এ অবস্থায় মেইন ফায়ার পাম্প চালু হওয়া অযৌক্তিক। তাই প্রকৃত আগুন দূর্ঘটনা ছাড়া সিস্টেমে যে অল্প প্রেসার ড্রপ করে তা পুরন করার জন্য মেইন পাম্প চালানো হয় না। বরঞ্চ একটা ছোট পাম্প দিয়ে সহজেই আমরা এই কাজটা করে থাকি। একে জকি পাম্প বলে। জকি পাম্প প্রেসার মেকআপ করে সিস্টেমকে আপডেটেড রাখে।
পাম্প ক্যাপাসিটি
সাধারনত দুটি প্যারামিটার দিয়ে একটা পাম্পের ক্যাপাসিটি নির্ধারন করা হয়- একটি পাম্পের ফ্লো রেট এবং অপরটি তার প্রেসার বা হেড। একটি নির্দিষ্ট সময়ে কি পরিমান পানি ডিসচার্জ করে সেটা পাম্পের ফ্লো রেট। এটাকে gpm-gallon per minute বা lpm- liter per minute দিয়ে প্রকাশ করা হয়। নীচে NFPA ২০ থেকে পাম্প রেটিং এবং এর সাথে সাকশন-ডিসচার্জ পাইপের সাইজ কত হবে তার একটি টেবিল দেয়া হলো। পাম্পের ফ্লো রেট কত হবে তা অনেকগুলো বিষয়ের সাথে জড়িত। আমাদের BNBC ২০২০ তে এসম্পর্কে একটা ইডলাইন দেয়া আছে। নীচের টেবিলটি সেখান থেকে নেয়া। টেবিলের হাইলাইটেড লাইনটি অনুসারে,অরডিনারী হ্যাজার্ড - ২ হলে ফ্লো রেট হবে ৩২০০ লিটার / মিনিট (৭৫০ gpm), এবং ১৯০০ লিটার / মিনিট (৫০০ gpm) যথাক্রমে স্প্রিংকলার এবং স্ট্যান্ডপাইপ এর জন্য। তবে উল্লেখ থাকে যে, এটা একটা রাইজারের জন্য। একের অধিক রাইজার হলে প্রতিটি অতিরিক্ত রাইজারের জন্য আরও ১০০০ লিটার/মিনিট বা ২৫০ gpm যোগ হবে যেমনটি বলা আছে BNBC ২০২০ তে। এখন আমরা পাম্পের প্রেসার বা হেড নিয়ে আলোচনা করব। আমরা জানি শুধু পানির প্রবাহ হলেই চলবেনা বরং সেই পানি আমাদেরকে নির্দিষ্ট একটি উচচতায় তুলতে হবে বা একটা নির্দিষ্ট গতিবেগে তা প্রবাহ করতে হবে । বিশেষ করে ফায়ার ফাইটিং এর ক্ষেত্রে একটা বিশেষ চাপে পানিকে স্প্রে বা জেট তৈরী করে, প্রবাহ করে আগুনে নিক্ষেপ করা লাগে। একাজটি করতে পানিকে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়। একাজে পাম্প তাকে সহায়তা করে- যান্ত্রিক শক্তিকে পাম্প পানিকে দান করে তাকে শক্তিশালী করে। ফলে সে দৌড়াতে থাকে- পাইপের মধ্যে দিয়ে নীচতলা থেকে ২০ তলা বা তারও বেশী উপরে উঠে। একটা পাম্প কত উচ্চতায় পানি তুলতে পারে সেটাই সেই পাম্পের হেড। সুতরাং পাম্প যত প্রেসার দিবে পানি তত উপরে উঠবে। অর্থাৎ পাম্পের প্রেসার যত বাড়াব হেড তত বাড়বে- সহজ কথা। পাম্প প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান পাম্প বিক্রি করে- পাম্পের টোটাল হেড এবং ফ্লো রেট উল্লেখ করে। আসলে টোটাল হেড বলতে আমরা কি বুঝি? আসুন নীচের চিত্রটা একটু খেয়াল করি এখানে সাকশন পজিটিভ বা ফ্লাডেড অবস্থা। কিন্তু ট্যাংকের পানির উচ্চতা বিভিন্ন। এমন অবস্থায় পাম্পের টোটাল হেড হলো: টোটাল হেড (H)= ডেলিভারী হেড (hd)- সাকশন হেড (hs আবার নীচের চিত্রটি খেয়াল করি এখানে সাকশন নেগেটিভ। তখন পাম্পের হেড হলো টোটাল হেড (H)= ডেলিভারী হেড (hd) + সাকশন হেড (hs উপরের দুটি চিত্রেই পানি পাইপ থেকে বাইরে পড়ছেনা, কোন প্রবাহ হচ্ছে না। এটাকে স্ট্যাটিক অবস্থা বলে। কিন্তু আমাদের তো স্ট্যাটিক নয়, ডাইনামিক অবস্থা প্রয়োজন, পানির প্রবাহ লাগবে। যখন কোন পানি প্রবাহিত হচ্ছে না- Shut off head
ক) যখন পানি প্রবাহিত হচ্ছে- Total head with flow
খ) পানি যখন প্রবাহিত হচ্ছে তখন পাইপ বা ফিটিংস-এর
সাথে পানির ঘর্ষন হচ্ছে। এটাকে আমরা বলি Friction head
গ) পানি শুধু প্রবাহিত হলেই হবেনা, তারও একটা গতি বা শক্তি থাকতে হবে। স্ট্যান্ড পাইপ বা হোজ সিস্টেমে আমরা একে নজেল প্রেসার বলি যা আমরা পূর্বের অধ্যায়ে আলোচনা করেছি।
এভাবে আমরা পাম্পের ফাইনাল প্রেসার যদি সূত্রের মাধ্যমে লিখতে চাই তাহলে পাব: পাম্পের প্রেসার (Ph) = নজেল প্রেসার (NPh) + ঘর্ষণ প্রেসার (Pf) + উচ্চতা (Ps, Static Head Pressure ) এবার আমরা পাম্পের ফ্লো রেট এবং প্রেসারকে একসাথে দেখব- এদের মধ্যকার সম্পর্ক কেমন? এই সম্পর্ককে একটা কার্ভের মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়। এটাকে আমরা পাম্প পারফরমেন্স কার্ভ বলি। উপরে চার্টে X এক্সিস বরাবর পাম্পের ফ্লো রেট এবং Y এক্সিস বরাবর পাম্পের হেড দেখানো হয়েছে। পাম্পটির ১০০% ফ্লো রেটে হেড হচ্ছে ১০০ মিটার (১০ বার)। যখন কোন ফ্লো নেই তখন পাম্পের হেড ১৪০ মিটার (১৪ বার)। পাম্পের ফ্লো রেট বাড়ার সাথে সাথে তার প্রেসার কমছে। এভাবে ফ্লোরেট যখন ১৫০% তখন এর প্রেসার ৬৫ মিটার বা ৬.৫বার। NFPA ২০ অনুসারে অন্যান্য পাম্প থেকে ফায়ার পাম্পের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, যখন কোন ফ্লো বা পানির প্রবাহ নেই তখন পাম্পের প্রেসার (Churn Pressure) তার রেটেড হেড/প্রেসার থেকে সর্ব্বোচ ১৪০% হতে পারবে। যদি ফ্লো পাম্পের রেটেড ফ্লো থেকে ১৫০% বেড়ে যায় তখন পাম্পের হেড তার রেটেড হেড বা প্রেসার থেকে ৬৫% এর নীচে নামতে পারবেনা।
ফায়ার পাম্প এক্সেসসরিজ
ফায়ার পাম্পের সাথে গুরুত্বপূর্ন কয়েকটি এক্সেসসরিজ থাকে যেমন প্রেসার গেজ, এয়ার রিলিজ ভালব, কেজিং রিলিজ ভালব, ফ্লো মিটার, আইসোলেশন ভালব, স্ট্রেইনার, কনসেনট্রিক-ইসেনট্রিক রিডিউসার, ননরিটার্ন ভালব, প্রেসার রিডিউসিং ভালব ইত্যাদি।
প্রেসার গেজ:
সাকশন এবং ডিসচার্জ উভয় লাইনেই এটি ব্যবহৃত হয় যা দিয়ে আমরা লাইনে ফ্লুইডের প্রেসার জানতে পারি। গেজ রেটিং রেঞ্জ পাম্প সাকশন পেশারের দ্বিগুন হতে হবে। সাকশন লাইনের প্রেসার ১.৩০ বারের নীচে হলে প্রেসার গেজ কম্পাউন্ড টাইপের হয় যা দিয়ে আমরা নেগেটিভ প্রেসার বা ভ্যাকুয়াম প্রেসারও মাপতে পারি। ডেলিভারীতে প্রেসার গেজের মেজারিং ক্যাপাসিটি পাম্পের ওয়ার্কিং প্রেসারের দ্বিগুন হবে। তবে ২০০ পিএসআই এর কম হবে না। ডায়ালে প্রেসারের ইউনিট বার বা পিএসআই বা উভয় ইউনিটই লেখা থাকে।
আইসোলেশন ভাল্ভ:
ফায়ার পাম্প সিস্টেমে গেট ভাল্ভ OS&Y- Outside Stem and Yoke, NRS- Non Rising Stem), বাটারফ্লাই ভালব এগুলো আইসোলেশন ভালব হিসাবে কাজ করে। এবং এই ভাল্ভগুলোকে সুপারভাইজড করা হয়। সুপারভাইজার সুইচের মাধ্যমে আমরা ভাল্ভটি খোলা বা বন্ধ কিনা তামনিটর করি। এটা ইলেকট্রিক্যালি ফায়ার এ্যালার্ম কন্ট্রোল প্যানেলের সাথে যুক্ত থাকে। ফলে প্যানেলে আমরা এটার অন/অফ অবস্থা একসাথে দেখতে ও ট্রেস করতে পারি।
ফ্লো মিটার:
এটা
পানির প্রবাহ মাপার কাজ করে। কত gpm বা lpm পানি প্রবাহিত হচ্ছে তা আমরা ফ্লো মিটার দিয়ে সহজেই মাপতে
পারি। ফায়ার হাইড্রেন্ট সিস্টেমে পাম্প পারফরমেন্স
টেষ্ট লাইনে এাঁ ব্যবহার করা হয়। এর
আগে পরে নির্দিষ্ট দূরত্বে দুটি আইসোলেশন
ভালব ব্যবহার করা হয়। ফ্লো মিটারের গেজ রেটিং পাম্পের রেটিং হতে মিনিমাম
১৭৫% হতে হবে। ফায়ার হাইড্রেন্ট সিস্টেমের জন্য ফ্লো মিটার থার্ড পার্টি সার্টিফাইড
হতে হবে।
কেজিং রিলিজ ভাল্ভ:
এটাকে সারকুলেশন
রিলিফ ভালভও বলে।
এটা ইলেকট্রিক ভ্যারিএ্যাবল পাম্পে
ব্যবহ্রত হয়। পাম্প রেটেড ফ্লো ২৫০০ gpm বা এর
নীচে হলে ভালভের সাইজ হবে ৩/৪” এবং ৩০০০ থেকে ৫০০০ gpm হলে ১” হবে।
এয়ার রিলিজ ভাল্ভ
এটা
সিস্টেম বা পাম্পের কেজিং-এ বদ্ধ বাতাসকে বের করে দেয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে। ওয়েট পাইপ স্প্রিংকলার
সিস্টেমে বা হরিজোন্টাল স্পিলিট কেজ পাম্পের কেজিং-এ ব্যবহার করা হয়। এটা থার্ড পার্টি
সার্টিফাইড হতে হবে। ভালবের সাহজ হবে ১/২” ডায়ামিটার।
পানির ট্যাংক (Fire Water Tank)
হাইড্রেন্ট সিস্টেমের জন্য পানি লাগবে। এই পানি যে কোন উৎস থেকে আসতে পারে। তবে শর্ত থাকে যে একটা নির্দিষ্ট পরিমান পানি সব সময় জমা থাকতে হবে। প্রয়োজনের সময় যেন পানি স্বল্পতার কারনে আগুন নির্বাপনে কোন সমস্যা না হয়। কোড বা স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে ফায়ার ট্যাংকের ধারন ক্ষমতা নির্নয় করতে হবে।
পানির চাহিদা ও ট্যাংকের
ধারন ক্ষমতা
এসম্পর্কে BNBC ২০২০ তে গাইডলাইন দেয়া আছে। আসুন নীচের টেবিলটি খেয়াল করি: অর্ডিনারী হ্যাজার্ড ২ অনুসারে স্ট্যান্ডপাইপ ও হোজ সিস্টেমের জন্য পাম্পের ফ্লো রেট হবে ১৯০০ লিটার/মিনিট (৫০০ gpm) এবং পাম্প চালাতে হবে সর্বনিম্ন ৭৫ মিনিট, ৯৫ মিনিট এবং ১১২ মিনিট যথাক্রমে ৫১ মিটার, ৫১ থেকে ১০২ মিটার এবং ১০২ মিটারের উপরে ভবনের উচ্চতা হলে। অর্থাৎ ৫১ মিটার উচ্চতার ভবনে ট্যাংকের ধারন ক্ষমতা হবে ১৯০০X৭৫= ১৪২৫০০ লিটার বা ১৪২.৫ ঘনমিটার বা ৫০৩০ সিএফটি পানি।
ট্যাংক ডিজাইন ও নির্মান
আমাদের
দেশে ফায়ার ওয়াটার ট্যাংক সাধারনত আরসিসির হয়। এটা স্টীলেরও হতে পারে- এমএস, গ্যালভানাইজড
স্টীল বা এসএস আবার প্লাস্টিক বা এফ আর পি
হতে পারে। আমাদের মত দেশে যেখানে পানি ফ্রীজের সম্ভাবনা নেই সেখানে আমরা স্টীল ট্যাংক
ব্যবহার করতে পারি। তবে ট্যাংক যা দিয়েই বানানো হোকনা কেন ট্যাংক তৈরীর সময় বিশেষ করে
ফায়ার ট্যাংক তৈরীর সময় নিচের বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রাখতে হবে:
১.
ট্যাংকের ধারন ক্ষমতা ঠিক আছে কিনা? আমরা অনেক সময় আন্ডার সাইজ বা ওভার সাইজ করে ফেলি- দুটির কোনটিই কাম্য নয়।
২. ট্যাংক পরিষ্কারের ব্যবস্থা আছে কিনা- ম্যানহোল, ল্যাডার, ড্রেন সিস্টেম থাকতে হবে।
৩.
ওভার ফ্লো বা ড্রেইন লাইন
৪.
ওয়াটার লেভেল, হাইড্রস্ট্যাটিক প্রেসার গেজ
৫.
এ্যান্টি-ভরটেক্স সাকশনপিট, ট্যাংক স্লোপ
৬.
পাম্প সাকশন টাইপ- ফায়ার পাম্পের ক্ষেত্রে পজিটিভ সাকশন জরুরী।
আন্ডার গ্রাউন্ড পাম্প
রুম ফ্লাডিং এবং কন্ট্রোল
জায়গার স্পল্পতার জন্য ওয়াটার ট্যাংক আন্ডার গ্রাউন্ড করতে হয়। আবার পাম্প সাকশন পজিটিভ করার জন্য সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পের ক্ষেত্রে পাম্পের সাকশন লেভেল ট্যাংকের তলার লেভেলে করতে হয়। এতে করে ট্যাংক ওভারফ্লো হয়ে, বাইরে থেকে পানি প্রবেশ করে বা পাইপ লিকেজ হয়ে পাম্প রুম ফ্লাডেড হওয়ার খবর আমরা মাঝে মাঝেই পাই। পাশের একটা পাম্প রুম পানিতে সয়লাব হওয়ার চিত্র দেখা যাচ্ছে। পাম্প, মোটর, কন্ট্রোল প্যানেল পানিতে ডুবে গেছে। এটা খুব বিপজ্জনক। পাম্পের রুমের এরুপ এক্সিডেন্টাল ফ্লাড রোধ করার জন্য নিন্মোক্ত ম্যাকানিজম অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে: ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর
১. লেভেল সুইচ
২. সাম্প পিট ও সাম্প পাম্প
৩. ইমারজেন্সি ড্র আউট, ড্রেন
৪. কন্ট্রোল প্যানেল, BMS,
রিমোট কন্ট্রোল
৫. আইসোলেশন ভালব, পাম্প অপারেটর
উপরোক্ত সিস্টেমগুলো নিন্মের লজিকে কাজ করে যাতে করে কোন একটা ফেল করলে অপরটি এগিয়ে আসে পাম্প রুম পানি মুক্ত রাখার জন্য:
মাটির উপর Above
Ground
জায়গা থাকলে ট্যাংক মাটির উপর হলে সবচেয়ে ভাল। একে এ্যাবাভ গ্রাউন্ড ট্যাংকও বলে। পাশের ছবিটি একটি এ্যাবাভ গ্রাউন্ড ট্যাংকের উদাহরন। পাম্প রুম ফাউন্ডেশনের কাজ চলছে। সাকশন আউটলেট দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কি টাইপের সাকশন হবে এটি। পজিটিভ সাকশন, তাইনা? এ্যাবাভ গ্রাউন্ড ওয়াটার ট্যাংক মডুলার টাইপও হতে পারে। এটা পোর্টেবল। এটাকে পার্ট বাই পার্ট সহজে খোলা বা লাগানো যায় তাই একে মডুলার বলে। নীচে একটা মডুলার টাইপের ট্যাংক দেখা যাচ্ছে। এটি স্টীলের তৈরী। অল্প পানির জন্য এগুলো বেশী কার্যকরী।
প্রকৌশলী মোঃ শাহজাহান আলম
B. sc. Engg. (Mech/BUET), FIEB, MBA
LEED Green Associate
More Topic

ABC OF FIRE SAFETY PLAN

Short Brief on Fire Fighting Pump

Why choose OS&Y Gate Valve- NAFFCO-...
